কাওছার আহমেদ রাহাত:গোয়াইনঘাটে জমে উটেছে স্বপন ফারুকের ভোটের লড়াই।ভোট গ্রহনের আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি। আগামী ২১ মে গোয়াইনঘাটে অনুষ্ঠিত হবে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ। ভোট চেয়ে প্রার্থীরা ছুটে চলেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে বিভিন্নপাড়া-মহল্লায়। কে কার চেয়ে বেশি কৌশল প্রয়োগ করে নিজের অবস্থান জোরদার করবেন এ নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলায় এবার চেয়ারম্যান পদে দুই জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের একজন গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শাহ আলম স্বপন,তিনি (ঘোড়া প্রতীকে) নির্বাচন করছেন।
ভোটাররা মনে করছেন, শাহ আলম স্বপন’ ভাইস চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় তার চলতি মেয়াদে সরকারি বরাদ্দ ছাড়াও তার নিজস্ব তহবিল হতে গোয়াইনঘাটে অকল্পনীয় নানা অবকাঠামো উন্নয়ন করেছেন। এজন্য এবারের নির্বাচনে (ঘোড়া প্রতীক) ভোটের মাঠে এগিয়ে রয়েছেন তিনি। এছাড়াও সততা, নিষ্ঠা ও পরিচ্ছন্নতায় মন মানসিকতা, ও যোগ্যতায় অনেক এগিয়ে আছেন স্বপন। কাজেই তারা কে কোন দলের প্রার্থী সেটা বিবেচনায় নিতে চান না। তারা ভোট দেবেন প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেজ ও যোগ্যতা দেখে।
অপরজন মোটরসাইকেল প্রতীকে বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ। বিগত ৫ বছরের ধারাবাহিক উন্নয়নের বর্ণনা তুলে ধরে (মোটরসাইকেল প্রতীকে) ভোট চাইছেন তিনি। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে গোয়াইনঘাট উপজেলাবাসী পুনরায় তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার আহবান জানান তিনি । তবে ভোটারদের অভিযোগ বিগত ৫ বছরে উপজেলায় তুলনামূলক দৃশমান কোন উন্নয়ন করতে পারেননি ফারুক। সেজন্য এবারের নির্বাচনে ভোটের মাঠে পিছিয়ে রয়েছেন তিনি।
ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী শাহ আলম স্বপন জানান, উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য একটি অসাম্প্রদায়িক উপজেলা গঠনই তার মূল লক্ষ্য। যেখানে থাকবে না কোনো জাতি-গোষ্ঠী ও ধর্ম-বর্ণের ভেদাভেদ। তিনি নির্বাচিত হলে পর্যটন সমৃদ্ধ এই উপজেলাকে সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবেন। প্রান্তিক কৃষকদের উন্নয়নে কাজ করবেন। গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও সড়কের উন্নয়ন, প্রকৃত ভাতা ভোগীদের প্রাধান্য দিয়ে ভাতার সুষম বণ্টন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান ও মন্দিরসমূহের মান উন্নয়ন,শিক্ষা শিল্প-সাহিত্যসহ সর্বোপরি জনগণের সার্বিক উন্নয়ন এবং ব্যক্তি পর্যায়ের বিকাশে সব পক্ষকে নিয়ে দলমত নির্বিশেষে কাজ করবেন। এছাড়া স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সমৃদ্ধ গোয়াইনঘাট গড়ে তোলার কথা জানান। সুষ্ঠু ভোট হলে বিজয়ের বিষয়ে আশা প্রকাশ করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী স্বপন।
এছাড়াও এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান জমিয়ত নেতা গোলাম আম্বিয়া কয়েস, শ্রমিক নেতা কুতুব উদ্দিন, যুবলীগ নেতা ফারুক আহমেদ, সাংবাদিক ইসলাম আলী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আফিয়া বেগম,সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান খোদেজা রহিম কলি ও মরিয়ম বেগম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জয়-পরাজয়ের ফ্যাক্টর হিসেবে সামনে আসছে বিভিন্ন সমীকরণ। তাইত সব প্রার্থীই নির্বাচনী প্রচার জোরদার শেষে নিজ নিজ কৌশল প্রয়োগ করেই যার যার ভোট ব্যাংকের বাইরে থাকা ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন।
প্রশাসন বলছে এ নির্বাচনের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে নির্বাচন কমিশন ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। প্রশাসনও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে।
এখন পর্যন্ত গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরিবেশ প্রশংসনীয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও প্রশাসনের লোকজন নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
উল্লেখ: গোয়াইনঘাট উপজেলায় মোট ৮৪টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ভোটার রয়েছে দুই লাখ ২৯ হাজার ৯৪১জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে এক লাখ ১৮৬৩৭ জন। এবং নারী ভোটার রয়েছে এক লাখ ১১৩০৪জন।
Leave a Reply