সড়ক পথের পাশাপাশি নৌ পথ এখন চোরাচালানীদের স্বর্গরাজ্য। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার নদী নালা ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য ঢুকছে বানের পানির মত।বিষেশ করে গোয়াইননদী,পিয়াইন নদী,সারি নদী এখন তাদের নিরাপদ রোড। ভারতীয় পণ্য চোরাচালান প্রতিবছর বৃদ্ধি পায়। বিজিবি ও পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলছে এই রমরমা চোরাচালান বাণিজ্য। এখানকার তালিকাভুক্ত চোরাচালানীরা ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর। এরা যেন সব ক্ষমতাসীনদের আশির্বাদপুষ্ট। আর অসাধু কর্মকর্তাদের আস্থাভাজন। তাই এদের যেন রুখা দায়।
গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার চিহ্নিত সীমান্ত ঘাটগুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত চোরাচালান হচ্ছে। এই পথ দিয়ে আসছে গরু, মাদক দ্রব্য, চিনি, কসমেটিক্স,আর শাড়ী কাপড়। সীমান্ত উপজেলার হাটবাজার ভারতীয় পণ্যে ছয়লাব। আর প্রতিদিন যুব সমাজের হাতে পৌছে যাচ্ছে ফেনসিডিল আর ইয়াবা। চোরাকারীরা চকলেট সামগ্রী, চিপস, হরলিক্স আর কসমেটিক্স আনছে হরহামেশা।
এসবের নেতৃত্বে রয়েছেন গোয়াইনঘাট উপজেলার বুরহান মিয়া, গোলাম হোসেন, নুরুল ইসলাম,নুরুজ্জামজন,নুরুল আলম,জিয়া, নাসির,কালা মিয়া,রাজা মিয়া, করিম, জয়দুল মিয়া,হযরত আলী শ্রমিক মেম্বার,ও জুলহাস,শাহাবুদ্দিন শাবই মেম্বার, আব্দুল্লাহ,
জিয়া, নাছির উদ্দীন,রহিম, আবুল হোসেন টিবিল্লা, হালিম, আব্দুলাহ, এবং জৈন্তাপুরের মনসুর আহমদ, সুজন আহমদ, মনা মিয়া, শহিদ উরফে ল্যাট্রিন শহিদ, আব্দুল করিম উরফে ব্যান্ডিজ করিম, বিলাল উরফে রূপা বিলাল, ইমরান হোসেন বিলাল। সুত্র বলছে,এরাই ম্যানেজ করে পুলিশ, বিজিবি, ডিবি,সহ প্রশানের অসাধু কর্মকর্তা।
জানা গেছে, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুরের দস্যু বাহিনীরাও এই চোরাচালানীদের পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে একটি চক্র একের পর এক কালোবাজারী করলেও কেন তাদের আইনে সোপার্দ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাচ্ছে না তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। বর্তমান সরকার চোরাচালান রোধে অত্যান্ত আন্তরিক। অথচ ফাঁক ফোকর দিয়ে প্রতিনিয়ত সীমান্তঞ্চলে চোরাচালান চলছে। সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্য বেমালুম চেপে যাচ্ছে। ব্লাকিং রুট ওপেন করে দিচ্ছে।
এদিকে মাদকদ্রব্য চোরাচালানিরা কোন অবস্থায় কখনই থেমে নেই। গত কয়েক মাস ধরে সীমান্ত অঞ্চলে র্যাব গোয়েন্দা পুলিশ ও বিডিআর চোরাচালানী পণ্য উদ্ধার করলেও গরু, মহিষ ও মাদক, কসমেটিক্স,চোরাচালান কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছেনা। কোন না কোন পথে প্রতিনিয়ত চোরাচালান অব্যাহত রয়েছে। অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেট চক্রটি। চোরাকারবারীরা প্রতি মুহুর্তে রুট বদলাচ্ছে । অভিযানের পর অভিযানেও থামানো যাচ্ছে না চোরাচালানীদের কর্মকান্ড। চোরাকারবারীরা এখন ফুলেফেপে কোটিপতি। তাদের গোডাউনে রয়েছে লাখ লাখ টাকার ভারতীয় মালামাল। মাদকের কারণেই সীমান্ত উপজেলাগুলোতে অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। চারিদিকে খুন রাহাজানি চাঁদাবাজি সংঘাত চরম আকার ধারন করেছে। আর যুব সমাজ এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
চোরাচালানের ল্যান্ডিক্যটাল হিসেবে ব্যবহার করা হয় গোয়াইনঘাট উপজেলার, তামাবিল, সোনাটিলা, সংগ্রামপুঞ্জি, ডাউকি বিজিবি ক্যাম্প, পান্তুমাই,লাখাট, বিছনাকান্দি বিজিবি ক্যাম্প)দমদমা, কলুমছড়া,পান্তমাই, লক্কনছড়া, খাসিয়াপুঞ্জি,সংগ্রামপুঞ্জি সীমান্ত, এবং জৈন্তাপুর উপজেলার ডিবিরহাওর,খলারবন্দ ৪৮ বিজিবি ডিবিরহাওর,মিনাটিলা, কেন্দ্রী হাওর, কাঠাল বাড়ী ৪৮ বিজিবি, সারীনদীর মুখ, লাল মিয়ার টিলা, বাঘছড়া, বালিদাঁড়া, সিঙ্গারীরপাড় (১৯ বিজিবি লালাখাল) ঘিলাতৈল,টিপরাখলা, গোয়াবাড়ী, জৈন্তাপুর (রাজবাড়ী) ক্যাম্প, নলজুরী,আলু বাগান, মোকামপুঞ্জি, শ্রীপুর, ৪৮ বিজিবি শ্রীপুর ক্যাম্প সহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতীয় চোরাকারবারীরা ভারত থেকে পণ্যসামগ্রী নিয়ে সীমান্ত এলাকায় জড়ো করে। সেখান থেকে সুযোগ বুঝে পণ্যসামগ্রী ডিআই ট্রাক, পিকআপ,নৌকা করে সিলেট সহ দেশের অনান্য স্থানেও সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে পুলিশ বলছে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে,এবং চোরাই পথে আসা ভারতীয় গরু, চিনি কসমেট্রিক্স সহ বিভিন্নপন্য ইতিমধ্যে আটক করেছেন তারা। সর্বশেষ গতকিছুদিন পূর্বে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে গোয়াইনঘাটের রুস্তমপুর গোলাম হোসেনের বাড়ি থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় গরুর চোরাচালান আটক করে। এর পর ২০জুলাই রাতে গোয়াইনঘাটের নদীপথে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা মুল্যের ১০টি ভারতীয় গরুর চালান আটক করে গোয়াইনঘাট থানাপুলিশ।
ছবি-গোয়াইনঘাটের নাইন্দা হাওর থেকে তুলা ভারতীয় ঘরুর নৌকা।
Leave a Reply