সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। ঈদের ছুটিতে বরাবরের মতো এবারও পর্যটক দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে সিলেটের গোয়াইনঘাটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। ঈদের দিন বৃহস্পতিবার থেকেই উপজেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ভিড় করেন ভ্রমণপ্রেয়সীরা,তবে এই দিন সিলেটসহ স্হানীয় পর্যটকের সংখ্যাই বেশি ছিলো।
আজ রবিবার ঈদের ৪র্থ দিন সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পর্যটক দর্শনার্থীমুখর হয় উঠে জাফলং,বিছনাকান্দি, রাতারগুল। তবে বিছনাকান্দি রাতুলগুলের তুলনায় পর্যটক উপস্থিতি বেশি ছিলো জাফলংয়ে।
সবুজের আস্তরণে মেঘালয়ের বিস্তৃত চোখ জোড়ানো সবুজ টিলা,পাহাড়,বয়ে চলা স্বচ্ছ জলরাশি,নুড়িপাথরের কলতানের সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য ভ্রমণে জাফলং ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা। গ্রীস্মের তাপদাহেও প্রকৃতি প্রেমিরা ছুটে এসেছেন প্রকৃতির কাছাকাছি। বরাবরের মতো এবারও এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে তাঁরা বিমুগ্ধ। পাহাড়,টিলার সাথে সাদা মেঘের লুকোচুরী। বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই প্রকৃতি যেন সেজেছে তার আপন মহিমায়। আগন্তকদের মধ্যে পরিবার-পরিজন আর বন্ধুবান্ধব নিয়ে ভ্রমণপিয়সীরা স্থানগুলো দর্শন করছেন। প্রতিটি স্পষ্টই লোকে লোকারন্য। প্রকৃতির এমন কাছাকাছি আসতে পেরে তারা খুশি। শুক্রবার দিনব্যাপী গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং, বিছনাকান্দি, সোয়াম ফরেস্ট রাতারগুল ছাড়াও পানতুমাই ঝর্ণা,দেশের একমাত্র সমতল জাফলং চা বাগান ও মায়াবী ঝর্ণাতেও পর্যটকদের পদচারণা ছিলো চোখে পড়ার মতো।
তবে সব চাইতে বেশি পর্যটকের ভিড় ছিল জাফলং জিরো পয়েন্ট। যাদের বেশিরভাগ দর্শনার্থীই ছিলেন উঠতি তরুণ-তরুণী। নদী, স্বচ্ছ জল, আর ভারতের মেঘালয়ের ওমঘট নদীর উপর ঝুলন্ত ব্রিজ,টিলা পাহাড়ের পাশাপাশি এখানকার খাসিয়া পল্লী,মায়াবী ঝরণাও মন কাঁড়ে ভ্রমণপ্রেয়সীদের। পর্যটক সমাগম বৃদ্ধি পাওয়ায় এখানকার হোটেল মোটেল রিসোর্টে কোন রুম খালি নেই আগামী ৪ দিন পর্যন্ত।অগণিত পর্যটকরা আগেই ফোন ও অনলাইনে বুকিং দিয়ে রেখেছেন সবকটি হোটেল মোটেল রিসোর্টের রুম সমুহ। জাফলং জিরো পয়েন্টের আশপাশের সবকটি খাবার হোটেল রেস্টুরেন্টের জমজমাট বিকিকিনি চোখে পড়ে। এখানকার হোটেল রেস্টুরেন্টের মালিকরা জানিয়েছেন পর্যটক,দর্শনার্থীদের সমাগম বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের হোটেল রেস্টুরেন্টের বিকিকিনি বেড়েছে। পর্যটকদের কথা বিবেচনা করে সূলভ মূল্যে সব ধরনের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। পর্যটকরাও তাদের রুচি অনুসারে পছন্দ সহকারে খাবার খাচ্ছেন।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে উপজেলার সবক'টি পিকনিক স্পটে পর্যটক,দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটকদের নিরাপত্তায় উপজেলা প্রশাসন তরফে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। টুরিস্ট পুলিশ,গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে জাফলং টুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ মো. রতন শেখ জানান, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে গতকাল থেকেই পর্যটকে মুখরিত জাফলং। আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা কাজ করছে। গোয়াইনঘাট থানা অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন,বেড়াতে আসা পর্যটকরা যাতে কোনভাবেই চুরি ডাকাতি ছিনতাই,মাদকসহ ভোগান্তিতে না পড়েন সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে। পর্যটক দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা বিবেচনা করে ইউনিফর্ম ও সাদা পোষাকের একাধিক টিম নিয়োজিত রয়েছে। গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহি অফিসার তৌহিদুল ইসলাম বলেন,জাফলং বিছনাকান্দি,রাতারগুলসহ গোয়াইনঘাটের পর্যটন স্পটে বেড়াতে আসা পর্যটক উপস্থিতি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলা প্রশাসন তরফে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন,পুলিশ বিভাগ আগত পর্যটকদের দোরগোড়ায় গিয়ে সেবা দিচ্ছে।