সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট উপজেলার অন্তর্ভুক্ত ২নং পশ্চিম জাফলং ও ১১নং মধ্য জাফলং ইউনিয়নের প্রায় ২০টি সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে আসছে ভারতীয় পণ্য, মাদক, মোটরসাইকেল, ব্র্যান্ডের স্মার্ট ফোন, চিনি, চা পাতা, শাড়ী-লুঙ্গী ও কসমেটিকস দ্রব্য সহ নানা ধরনের ভারতীয় আগ্নেঅস্ত্র।
২নং পশ্চিম জাফলং ও ১১নং মধ্য জাফলং ইউনিয়নের প্রায় ২০টি সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে আসা এসব ভারতীয় পণ্য থেকে দীর্ঘদিনযাবত গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ও ডিবি উত্তর গোয়েন্দা শাখার পুলিশের নামে প্রকাশ্য দৈনিক লক্ষ লক্ষ টাকা চাঁদা উত্তোলন করে আসছেন পুলিশের লাইনম্যান খ্যাত শ্যাম কালা।
অভিযোগ প্রকাশ, লাইনম্যান শ্যাম কালা চোরাই পথে আসা এসব ভারতীয় পণ্য থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ও ডিবি উত্তর গোয়েন্দা শাখার নামে চাঁদাবাজি করে সাপ্তাহে কয়েক লাখ টাকা গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ও ডিবি উত্তর গোয়েন্দা শাখার কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের নিকট তুলে দেন এমনকি পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এই চাঁদাবাজির একটি অংশ ১ হাজার কিংবা ৫শ’ করে বখরা হিসেবে সাপ্তাহে স্থানীয় কিছু ভূয়া বখরাবাজ সাংবাদিকদের বিকাশ পাঠিয়ে তাদের মুখ বন্ধ রাখেন। ঠিক তেমনি সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের এক মফস্বল সাংবাদিককে একাধিকবার লাইনম্যান শ্যাম কালা বিকাশে বখরা হিসেবে কিছু টাকা পাঠান। তবে ওই সাংবাদিকের দাবি তিনি তথ্য উদঘাটনের স্বার্থে লাইনম্যান কালার পাঠানো বখরা রিসিভ করেছেন।
স্থানীয় সুত্রমতে- পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নে বেড়ে ওঠা শ্যাম কালা এ কসময় ছিলেন একজন সাধারণ পাথর শ্রমিক। বিগত সময়ে রাতের আঁধারে পাথর চুরি করতে গিয়ে পুলিশের দৌড়ানি খেয়ে পালিয়ে আসা শ্যাম কালা আজ পুলিশের নামেই চাঁদাবাজি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে কাটাচ্ছেন রাজকীয় বিলাস জীবন। এক সময় তার আয়ের উৎস ছিলো দিনাতিপাত আর পুলিশের লাইনম্যান হিসেবে চাঁদাবাজি করে বনে গেছেন প্রাইভেট নোহাগাড়ি, দামি মোটরসাইকেল সহ বহু সম্পদের মালিক। এছাড়াও চাঁদাবাজির অবৈধ কালো টাকার জুড়ে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা জন্য রয়েছে একাধিক ভাড়াটে লাঠিয়াল বাহিনী। চাঁদাবাজ পুলিশের লাইনম্যান শ্যাম কালার এমন কর্মকান্ডে মনে হয় সে কোন মন্ত্রীর পুত্র।
সুত্র বলছে- পুলিশের লাইনম্যান শ্যাম কালা অতীতে বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তবে চোরাচালানের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে সে তার ‘সাম কালাড’ নামের ব্যাক্তিগত ফেইসবুক আইডি থেকে প্রতিনিয়ত আওয়ামিলীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামের পোস্ট শেয়ার করে নিজেকে হাইব্রিড আওয়ামিলীগ নেতা হিসেবে দাবী করেন।
এ প্রতিবেদন ছাড়াও পূর্বে পুলিশের লাইনম্যান শ্যাম কালার বিরুদ্ধে জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় দৈনিক সহ সিলেটের একাধিক অনলাইন পত্রিকায় বহু শিরোনাম ধারাবাহিকতায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও অদৃশ্য কারণে তার বিরুদ্ধে একশন নিতে হিমশিম খাচ্ছেন গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ ও ডিবি উত্তর গোয়েন্দা শাখার পুলিশ।
এব্যাপারে সদ্য বদলির আদেশ প্রাপ্ত ডিবি উত্তর গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কল না তুলায় এ প্রসঙ্গে তার বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশের লাইনম্যান শ্যাম কালার বিরুদ্ধে অদৌ কি আইনানুগ কোন ব্যবস্থা নিতে পারবে প্রশাসন? এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে গোয়াইনঘাট উপজেলার সচেতন মহলে!