দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঈগল প্রতীকের প্রার্থীদের (স্বতন্ত্র) মধ্যে জোটের কোনো সম্ভাবনা আছে কি-না সংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হবিগঞ্জ-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, ‘‘যারা ঈগল মার্কা নিয়েছেন তাদের মধ্যে জোট হওয়ার কোনো কারণ নাই। অনেকেই তো আছেন ট্রাক মার্কা নিয়েছেন। অনেকে নিয়েছেন রকেট মার্কা। তবে বেশিরভাগ প্রার্থীই ঈগল পাখি নিয়েছেন।‘‘আপনারা যদি মার্কা দেখেন, তাহলে দেখবেন যে মার্কা হিসেবে ঈগল পাখিটাই সুন্দর। স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত একেবারেই ব্যক্তিগত। যে যেখানে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন, তিনি তার অবস্থান, চিন্তা-ভাবনা, জনগণের সঙ্গে তার অবস্থা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’গত বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে হবিগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমিতে বিশেষ আইনশৃঙ্খলা ও মতবিনিময় সভার আগে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।ঈগল প্রতীক নেওয়ার কারণ হিসেবে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘‘আমার ছোটবেলা থেকেই দুইটা কারণে ঈগল পাখির প্রতি দুর্বলতা আছে। একটা হচ্ছে- ঝড়-তুফানের সময় সকল পাখি নীড়ে গিয়ে আশ্রয় নেয়। আর ঈগল পাখি ঝড়-তুফানে ওপরে উঠে গিয়ে ঝড়-তুফান মোকাবিলা করে। এটা আমার চরিত্রের সাথে যায়।‘‘আরেকটা হচ্ছে- ঈগল পাখির ৪০ বছর হওয়ার পর সবকিছু দুর্বল হতে থাকে। দাঁত-নখ দিয়ে শিকার ধরতে পারে না। তখন সে পাহাড়ে গিয়ে একটা কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়। পাথরে ঘষে ঘষে তার নখ-দাঁত আবার সে ধার করে। তারপর ফিরে এসে নতুন আঙ্গিকে ৭০ বছর পর্যন্ত শিকার করতে পারে। তো আমার বয়স ৪৪, ৪০ বছর পর্যন্ত আমি যা দুর্বল হওয়ার পড়াশোনা করে-টরে হয়েছি। ৪০ থেকে ৪৩ পর্যন্ত আবার নতুন উদ্যমে নিজেকে তৈরি করেছি।’’তিনি আরও বলেন, ‘‘৪৯টা ব্রিজ বানাইছি, হাজার হাজার গাছ লাগাইছি। এখন আমার বিশ্বাস আগামী ৩০ বছর ঈগলের মতো করে যে নিশানা ও মিশন আমি ঠিক করছি- আমার এলাকার মানুষকে দুর্নীতিবাজ ও পরিবেশ ধ্বংসকারীদের কাছ থেকে মুক্ত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা উপহার দিতে চাই।’’স্বতন্ত্র হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি আসলে একেবারেই নিজের মত করে স্বতন্ত্র। মনে রাখবেন আমি স্বতন্ত্র ঠিকই, কিন্তু আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার পারমিশন নিয়ে স্বতন্ত্র। আমাকে একেবারে স্বতন্ত্র যেটা তা বলা ঠিক হবে না। আমি তো জননেত্রী শেখ হাসিনার পারমিশন নিয়ে স্বতন্ত্র।‘‘এখানে যে যুদ্ধটা হবে, যারা নৌকা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আছেন, তারা যদি জনপ্রিয়তা হারিয়ে থাকেন, তাহলে নৌকা থেকে শুধু মাঝিটা বদল হবে। আর মাঝি দুর্বল বা রিস্কি হলে এই নৌকায় তো লোকজন উঠতে চাইবে না। জননেত্রী একজনকে দিয়েছেন নৌকার নমিনেশন। আর আমাকে দিয়েছেন স্বতন্ত্র নির্বাচন করার পারমিশন।’’ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘‘আমার আসনে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী এখন পর্যন্ত মন্ত্রীর প্রটোকল-প্রটেকশন ও পুলিশকে সাথে নিয়ে ভোট চাচ্ছেন। এভাবে তো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হয় না। তারপরও উনি এই প্রটেকশন ছাড়ছেন না এবং পুলিশকে ব্যবহার করছেন। মাঠে একটা ইমপ্রেশন দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তার সাথে যেহেতু এখন পুলিশ আছে, তারা নির্বাচনের আগের দিন রাতেও থাকবে।‘‘নির্বাচনের দিনও থাকবে। এটা আমার জন্য একটা বাধা। এ নিয়ে আমি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছি। আমি দেখতে চাই উনারা কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।’’