সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্তৃক এসএসসি সমমান পরীক্ষা ২০২৩ এর নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্র ফিলাপের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকটি ভিডিও চিত্র ছড়িয়ে পড়লে সিলেট জুড়ে চলে আলোচনা সমালোচনা। যার পরিপ্রেক্ষিতে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং তিন কার্য্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানাযায়, গোয়াইনঘাটে অর্থের বিনিময়ে আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব মো. মনিরুজ্জামান এবং ডাক্তার ইদ্রিস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও হল সুপার মুখলেছুর রহমান, আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বাংলা) নজরুল ইসলাম একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক (গনিত) শরিফ উদ্দিন, হাজী সোহরাব আলী স্কুল ও কলেজের সহকারি শিক্ষক (গনিত) রিয়াজ উদ্দিন সহ আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪জন খন্ডকালীন শিক্ষক ঘটনায় জড়িত মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি।
তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রাপ্তির পরপর গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে দাখিলের পর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেট, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সিলেট এবং সিলেট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রেরণ করা হয়।
অপরদিকে তদন্ত প্রতিবেদনের পর শুধুমাত্র আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের খন্ডকালীন ৪ শিক্ষক (কাওছার আহমেদ, আল-মেহরাব, আব্দুল আহাদ ও শুভা আক্তার) কে বিদ্যালয়ের পাঠদান হতে বিরত রাখা হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্র ফিলাপের ঘটনার মূল নায়ক আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান, ডাক্তার ইদ্রিস আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুখলেছুর রহমান, আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বাংলা) নজরুল ইসলাম একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক (গনিত) শরিফ উদ্দিন, হাজী সোহরাব আলী স্কুল ও কলেজের সহকারি শিক্ষক (গনিত) রিয়াজ উদ্দিন। স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে তারা বহল তবিয়তে রয়েছেন।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবকরা বলেন, অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের নিকট হতে সুবিধা নিয়ে নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্র ফিলাপ করে দিয়ে অন্যান্য শিক্ষাথীদের সুষ্ট পড়ার পরিবেশ বিনষ্ট করে ন্যাক্কার জনক ও জঘন্য কাজ করেছেন। জাতী গঠনের কারিগর শিক্ষকদের সুনাম বিনষ্ট করেছেন এবং প্রতিষ্ঠান গুলোকে শিক্ষা বানিজ্যের বানিজিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে বৃহত্তর সিলেট সহ বাংলাদেশের মধ্যে কলঙ্কের দাগ অঙ্কন করেছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে জড়িত চিহ্নিত হওয়া এসব শিক্ষকদের প্রতিষ্ঠান গুলোতে পাঠদান সহ অন্যান্য কাজ হতে বিরত রাখার দাবী জানান।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে সু-ষ্পষ্ট ভাবে এসএসসি-২৩ পরীক্ষায় শিক্ষকগণ কর্তৃক নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্র ফিলাপ করেছেন মর্মে অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে।
সিলেট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সাঈদ মো. আব্দুল ওয়াদুদ প্রতিবেদকে জানান, গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে চলমান রয়েছে। কার্যক্রম শেষ হলে মহা পরিচালক বরাবর ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ প্রেরণ করা হবে।